কুষ্টিয়ার নব প্রতিভাবান কণ্ঠশিল্পী কৌশিক রহমান
কুষ্টিয়া জেলা বাউল সম্রাট ফকির লালন সাইঁজি, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাঙ্গাল হরিনাথ, কথা সাহিত্যিক মীর মোশারফ হোসেন এর মত মনিষীদের পদচারণায় ধন্য, কুষ্টিয়া জেলাতে কবি আজিজুর রহমান, মকসেদ আলী সাইঁ, আব্দুল জব্বার, খালিদ হোসেন, নার্গিস পারভিন ও ফরিদা পারভীন’দের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাত শিল্পীদের জন্ম এছাড়াও আরো অনেকে আছেন, এ জেলাতে নতুন প্রতিভাবান শিল্পী জন্ম নেবে এটাই স্বাভাবিক, জেলাতে বেশকিছু উদীয়মান শিল্পী আছে তবে তাদের মধ্যে কৌশিক রহমান (১৪) অন্যতম। কৌশিক রহমান মূলতঃ শাস্ত্রীয় সংগীত, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক, গজল গান গেয়ে থাকেন। কৌশিক কুষ্টিয়া শহরের কাষ্টমস্ মোড় এলাকার আতিয়ার রহমান ও শামীমা খাতুন এর একমাত্র সন্তান। সে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম (বিজ্ঞান) শ্রেণীর ছাত্র, গানের মতোই লেখাপড়াতেও মেধাবী, সে কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির সংগীত বিভাগের একজন নিয়মিত ছাত্র। বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় ছোটবেলা যখন বয়স মাত্র ৬ বৎসর ২০১৫ সালে “সুরসপ্তক একাডেমির পরিচালক সঙ্গীত শিক্ষক জনাব সালাউদ্দিন আহমেদ এর নিকট সংগীতে প্রথম হাতেখড়ি হয ২০১৭ সাল থেকে কুষ্টিয়ার আরেকজন গুণী সঙ্গীত শিক্ষক জনাব খন্দকার মিজানুর রহমান বাবলু’র নিকট তালিম গ্রহন করে এরপর ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত উস্তাদ শেখ আব্দুল করিম (কেষ্ট) এঁর নিকট শাস্ত্রীয় সংগীত ও রাগপ্রধান নজরুলসংগীত তালিম গ্রহন করেন উনার মৃত্যুর পর বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ শান্তিপুরের বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ জনাব বনকেশ সরকার এঁর নিকট শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিচ্ছে। ২০২০-২০২২ সাল পর্যন্ত তারিফ হাসান এর নিকট থেকে মান্না’দের আধুনিক গানের তালিম নেন। ২০১৯ সাল থেকে অদ্যাবধি জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদে নিয়মিতভাবে রবীন্দ্রসংগীত এর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে যাচ্ছে। ২০১৫-২০২২ সাল পর্যন্ত একটানা দীর্ঘদিন দেশের প্রথিতযশা তবলার ওস্তাদ জনাব শওকত হোসেন খান এঁর নিকট তবলায় তালিম গ্রহন করে। ২০১৭-২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ শিশু একাডেমী কুষ্টিয়া থেকে ৩ (তিন) বৎসরকালীন সঙ্গীত প্রশিক্ষণ প্রহন করেন, প্রশিক্ষণকালীন ৩ বৎসরে ৩ টা বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় তিনবারই প্রথম স্থান অধিকার করে। ২০২০ সাল থেকে অদ্যবধি জেলা শিল্পকলা একাডেমী কুষ্টিয়ার ৪ বৎসর মেয়াদ প্রশিক্ষণ কোর্স সংগীত বিভাগের এর শেষ বর্ষের ছাত্র উল্লেখ্য ১ম, ২য়, ও ৩য় বর্ষ বার্ষিক মূল্যায়ন পরিক্ষায় কৌশিক প্রথম স্থান অধিকার করে এছাড়াও কৌশিকের গানে তবলার সঙ্গত দিয়ে যে দুজন মানুষ সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করে আসছেন তারা হলেন কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির তালযন্ত্র প্রশিক্ষক জনাব ইমতিয়াজ হাসান দিপু ও জনাব আকাশ চক্রবর্তী। কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জনাব হাজী রবিউল ইসলাম (কৌশিকের দাদাভাই) ও সহযোগী অধ্যাপক জনাব ড. আকলিমা খাতুন ইরা সংগীতের ব্যাপারে কৌশিককে সবসময় সাহস ও উৎসাহ যুগিয়ে চলেছেন, তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশিকের সংগীতের ব্যাপারে খোঁজখবর রাখেন, উনারা আশাবাদি সংগীতে কৌশিক একদিন অনেক ভালো করবে, সংগীতে আরো বেশী উৎসায়িত করতে চেয়ারম্যান মহোদয় তাঁর নিজের হারমোনিয়ামটি কৌশিককে উপহার দিয়েছেন। সঙ্গীতের বিভিন্ন ধারায় সমান দক্ষতায় কৌশিকের পদচারনা যেমন প্রায়ত কিংবদন্তী সুরসাধক মান্না’দে স্মরণে ২ বার একক সংঙ্গীতানুষ্ঠান, প্রায়ত কিংবদন্তী শিল্পী মোঃ রফি স্মরণে একক সংঙ্গীতানুষ্ঠান, কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মরণে ২ বার একক সংঙ্গীতানুষ্ঠান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মরণে একক সংঙ্গীতানুষ্ঠান, দেশাত্ববোধক গানের একক সংগীতানুষ্ঠান করেন। এছাড়া ২০১৭ সাল থেকে অদ্যবধি স্কুল পর্যায়, উপজেলা পর্যায়, জেলা পর্যায়, বিভাগিয় পর্যায় সংগীত ও তালযন্ত্র তবলা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। কৌশিক রহমান পশ্চিমবঙ্গের পন্ডিত শ্যামসুন্দর গোস্বামী (শাস্ত্রীয় সংগীত) ও পন্ডিত শুভ্রাংশু চক্রবর্তী(তবলা) এর কর্মশালায় কৃতিত্বের সাথে সনদ পত্র লাভ করে। কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগীতে বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন। কৌশিক রহমান এককভাবে বিখ্যাত গজল সম্রাট ওস্তাদ মেহেদি হাসান খাঁ সাহাব, ওস্তাদ হাবিব ওয়ালী মোহাম্মদ, ওস্তাদ গোলাম আলীসহ বহু বিখ্যাত শিল্পির গজল, মান্ন’দেজীর আধুনিক, রবীন্দ্রসংগীত ও নজরুলসংগীত গেয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে, এই অল্প বয়সে একইসাথে এত বড় বড় শিল্পীদের গান দক্ষতার সাথে গেয়ে অনেক সুনাম অর্জন করেছে যা সত্যিই অবিশ্বাস। কৌশিকের বযস যখন ০৭ বৎসর ২০১৭ সালে কুষ্টিয়া ০৩ আসনের সংসদ সদস্য ও কুষ্টিয়া উন্নয়নের রুপকার জনাব মাহবুব উল আলম হানিফ মহোদয়ের বাড়ীর সামনের অনুষ্ঠানে এমপি মহোদয় কৌশিকের গানশুনে মুগ্ধ হয়ে কৌশিককে ডেকে কোলের উপর বসিয়ে অনেক আদর করেছিলেন এবং বলেছিলেন “তুমিতো থ্রি নট থ্রি বুলেটের মতো গান গাইলে এটা কিভাবে গাইলে, আমি নিশ্চিত একদিন তুমি অনেক বড় শিল্পী হবে” এমপি মহোদয় সেদিন কৌশিককে ঠিকই চিনেছিলেন, আসলে জহুরী জোহর চেনে। কৌশিকের বাবা মা দেশবাসীর নিকট দোয়া প্রত্যাশী কৌশিক যেনো সকলের ভালোবাসা নিয়ে সকলের ভালোলাগার গানগুলো গেয়ে যেতে পারে।