নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে ইইউ।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠকে করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচন বিষয়ক পর্যবেক্ষক দল। এ সময় আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তারা। দলটির কাছে নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষক চেয়েছে কমিশন। যত খুশি পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারবে বলেও জানায় ইসি।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ইসির সম্মেলন কক্ষে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। বৈঠকে রিকার্ডো শেলেরির নেতৃত্বে ইইউ প্রতিনিধি দলে ছিলেন পাঁচজন।
সফররত দলের প্রধান জ্যেষ্ঠ নির্বাচন বিশেষজ্ঞ রিকার্ডো চিলেরি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন পূর্ব পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দুই সপ্তাহের জন্য আমরা এখানে এসেছি। পর্যালোচনা শেষে ইইউর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জানাব। তারপর পর্যবেক্ষণ প্রতিনিধি দল পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আমাদের কোনো মিডিয়া প্রোফাইল নেই, তাই কোনো প্রশ্ন নিচ্ছি না।
এ সময় ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন।
‘আমাদের ভোটার, ভোটকেন্দ্র ও প্রস্তুতি এবং সিসি ক্যামেরাসহ সব বিষয়ে তারা জানতে চেয়েছেন। আগামী ১৮ ও ১৯ জুলাই ইইউর একটি টেকনিক্যাল টিম ইসির সঙ্গে মিটিং হবে। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-১ ও ২ এর সঙ্গে মিটিং করে আরো বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবে। আজকের মিটিংয়ে তাদের কিছু প্রশ্ন ছিল, সেগুলোর জবাব দিয়ে আমাদের কমিশন তাদের সন্তুষ্ট করেছে।’
অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘তারা প্রধান নির্বাচনী প্রস্তুতিটা কী তা জানতে চেয়েছে। আমাদের মেইনলি রোডম্যাপ, আমরা তা নিয়ে কাজ করছি। ট্র্যাকেই আছে। নির্বাচন কমিশন ফেয়ারলি নির্বাচন করতে সক্ষম কি না সেসব বিষয়গুলো জানতে চেয়েছে। ইসি সে বিষয়গুলো এক্সপ্লেইন করেছে, তারা সেটিসফাইড।’
এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘তারা আমাদের পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চেয়েছে এবং তাদের পর্যবেক্ষক পাঠানোর জন্য যা যা করতে হবে সে বিষয়ে জানতে চেয়েছে। আমরা এ বিষয়ে তাদের বলেছি, পর্যবেক্ষক পাঠাতে হলে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন দিলে ভালো হয়। কারণ, আরো কিছু ফরমালিটি রয়েছে। স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্সের বিষয়ও রয়েছে। পর্যবেক্ষক পাঠাতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের কোনো লিমিটেশন নেই। তবে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক যত খুশি তত তারা পাঠাতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘অবজারভার পাঠানোর বিষয়ে কী কী প্রস্তুতি নিতে হয়, ইসি কী করবে তা জানতে চেয়েছে। কমিশন বলেছে, তারা যত সংখ্যক ইচ্ছা অবজারভার পাঠাতে পারে, এর কোনো লিমিটেশন নেই। আবেদনের জন্য টাইম ফ্রেম আছে কি না জানতে চেয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদনগুলো এলে সুবিধা হয় বলে কমিশন জানিয়েছে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার বলেন, ‘আমাদের এ পর্যন্ত ৯১১টি নির্বাচন হয়েছে। তাতে সন্তোষ রয়েছে তাদের। পরিবেশ নিয়ে এখন পর্যন্ত সেটিসফাইড হলেও তারা আরো আলোচনা করবে। তারা ২৩ জুলাই পর্যন্ত থাকছে। ১৮-২২ জুলাইয়ের মধ্যে তারা আবারও টেকনিক্যাল টিমের সঙ্গে বসবে। নির্বাচনকালীন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটে আনার বিষয় আলোচনায় আসেনি।’
নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে আসা আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত ইইউ প্রতিনিধি দলটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।