নির্বাচন পর্যন্ত জাপাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল

শেয়ার করুন

সরকারের ‘ভুলত্রুটি’ নিয়ে বছরখানেক ধরে জি এম কাদেরের বক্তব্য এবং তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান আলোচনায় এনেছিল জাতীয় পার্টিকে (জাপা)। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত গ্রহণে জি এম কাদেরের ওপর আদালতের এক অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা হঠাৎ করেই যেন চুপসে দিয়েছে জাপাকে।

এ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের যে আবেদন করেছেন, তার ওপর শুনানি শেষে আগামীকাল বুধবার আদেশের দিন রেখেছেন আদালত।

জাপার দায়িত্বশীল নেতারা মনে করছেন, বিষয়টি আইনি হলেও এর ভেতরে বিশেষ রাজনৈতিক ‘বার্তাও’ আছে। এটা নির্বাচন পর্যন্ত জাপাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল হতে পারে সরকারের।

কাজী ফিরোজ রশীদ, কো–চেয়ারম্যান, জাপা

জাপা দলীয় সূত্র জানায়, দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টির নিষ্পত্তি না হলে বা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশটি আরও কিছুদিন বহাল থাকলে দলে জটিলতা বাড়বে। কারণ, ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন আগামী ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। ২৯ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তার আগেই জি এম কাদেরের ওপর আদালতের দেওয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশটি প্রত্যাহার না হলে রংপুরে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন ফরমে তিনি স্বাক্ষর দিতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে দলের দ্বিতীয় প্রধান বা মহাসচিবকে মনোনয়ন ফরমে সই দিতে হবে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি যদি এ পর্যন্ত গড়ায়, তাতে নানা বিভাজনের মধ্যে থাকা দলটির উচ্চপর্যায়ে সন্দেহ ও অবিশ্বাস আরও বেড়ে যেতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপার একজন কো–চেয়ারম্যান গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আশা করেন, ১৬ নভেম্বরেই এর নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। চেয়ারম্যানই মনোনয়ন ফরমে সই করবেন। যদি নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি সই করতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে মহাসচিব মনোনয়ন ফরমে সই করবেন।

গত রোববার জাপা রংপুর সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমানকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে। দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের পক্ষে মহাসচিব মজিবুল হক এ মনোনয়ন ঘোষণা করেন। এখন ২৯ নভেম্বরের আগে জি এম কাদেরের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার নিষ্পত্তি না হলে নেতা-কর্মীদের কাছে এর ‘ভিন্ন বার্তা’ যাবে বলে মনে করছেন জাপার নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা।

জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরকে অবৈধ ঘোষণার আদেশ চেয়ে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলাটি করেছিলেন দল থেকে বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক। গত ৩১ অক্টোবর আদালত জি এম কাদেরের ওপর ওই অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। এর পর থেকে জি এম কাদের চুপচাপ রয়েছেন। এ ঘটনায় জাপার উচ্চপর্যায়ের নেতারাও হতচকিত। তাঁরা ভাবতে পারেননি দলীয় প্রধানের ওপর আদালত থেকে এত কঠোর সিদ্ধান্ত আসবে এবং তা এত দিন পর্যন্ত গড়াবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *