<strong>বিলুপ্ত হয়েযাচ্ছে দেশীয় পাখি</strong>

শেয়ার করুন

পরিবেশ দূষণের ফলে আবহাওয়ার যে পরিবর্তন হচ্ছে, এতেও অনেক পাখি মারা যাচ্ছে। তা ছাড়া জলাশয়ের অভাবেও অনেক পাখি প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পাখির মধ্যে দাগিডানা, ধূসর মেটে তিতির, বালিহাঁস, গোলাপি হাঁস, বড় হাড়গিলা, ধলাপেট বগ, রাজ শকুন, দাগিবুক টিয়াটুটি, লালমাথা টিয়াটুটি, গাছ আঁচড়া, সবুজ ময়ূর ইত্যাদি অন্যতম। যে পাখিগুলো আগে খুব দেখা যেত, এখন কম দেখা যায়- সেগুলোর মধ্যে দোয়েল, টিয়া, ময়না, বুলবুলি, চড়–ই, শ্যামা, শালিক, টুনটুনি, ঘুঘু, কাঠঠোকরা, মাছরাঙা, কোকিল, চন্দনা, সাদা বক, কালিম, ডানা ঘুরানি, বউ কথা কও, বাবুই ইত্যাদি অন্যতম।

সময়ের পরিক্রমায় মানুষ বাড়ছে। জঙ্গল আর বনবাদাড় উজাড় করে গড়ে উঠছে বাড়িঘর। অন্যদিকে জলাশয়গুলোর কিছু অংশ সংস্কার করে বানানো হচ্ছে কৃত্রিম মৎস্য খামার। আবার বাওয়া ধান বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক বছর আগেই। কারণ যান্ত্রিক কৃষির যুগে বাওয়া ধানের পরিবর্তে এসব জমিতে বর্ষার পর শ্যালো টিউবওয়েলে সেচ দিয়ে চাষ হচ্ছে উচ্চফলনশীল বোরো ধান। ফলে বনজ ও জলজ পাখির আবাসস্থল প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে।

এক সময় দেশের বিভিন্ন জনপদে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি ঘুরে বেড়াত। প্রতিটি পাড়া বা গ্রামের পেছনেই দেখা যেত ঘন জঙ্গল। ঠাসা থাকত নানা রকম গুল্ম, জারুল, বরুণ, মেরা, শেওড়া, গাবসহ বিভিন্ন বনজ গাছ। এসব জঙ্গল মুখরিত থাকত নানা প্রজাতির পাখির কোলাহলে। বাড়ির উঠান থেকে ঘরের বারান্দা পর্যন্ত শালিক, চড়ুই অবাধে বিচরণ করত। এখন বনজঙ্গলের গাছে তেমন পাখি চোখে পড়ে না। জলাশয়ের পাখি তো একেবারেই বিরল। দেশের বনবাদাড়, হাওর, বিল, ডোবাসহ বিভিন্ন জলাশয়ে দেশীয় প্রজাতির পাখি হারিয়ে যাচ্ছে।

প্রকৃতি, পরিবেশ ও বন সৃষ্টিতে পাখির ভূমিকা অপরিসীম। পাখির সংখ্যা যেখানে কম, প্রকৃতি সেখানে মৃতপ্রায়। প্রকৃতির সৌন্দর্যেও পাখির ভূমিকা অনেক। পাখিহীন, বৃক্ষহীন পরিবেশ এক সময় মানুষের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখি টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *